ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার উদ্দেশ্য | দৃষ্টিহীন শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য

ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন

সাধারণভাবে যারা চোখে দেখতে পায় না , তাদেরকে আমরা দৃষ্টিহীন বলি।

আইনগত সংজ্ঞা অনুযায়ী: যেসকল ব্যক্তির ভিস্যুয়াল অ্যাকুইটি ২০/২০০ বা তারও কম তাদের দৃষ্টিহীন বা ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন বলা হয় ।

শিক্ষাগত সংজ্ঞা অনুযায়ী: যেসকল অন্ধ শিশুরা শিক্ষাক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিকে ব্যবহার করতে পারে না, শ্রবণশক্তি ও স্পর্শ ক্ষমতার উপর নির্ভর করতে হয় তাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বা ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন বলা হয়।

ব্যাহত দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার উদ্দেশ্য

স্বাভাবিক শিশুদের মতােই এদের শিক্ষার উদ্দেশ্য প্রয়ােজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত হয়। উদ্দেশগুলি হল―

(1) আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তােলা : স্বাভাবিক শিশুদের মতাে এরা যেহেতু স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সক্ষম হয় না, তাই তারা হীনম্মন্যতায় ভােগে। শিক্ষার উদ্দেশ্য হল, হীনম্মন্যতা দূর করে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করা।

(2) বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার : শিক্ষাক্ষেত্রে যেহেতু তারা চোখের ব্যবহার করতে পারে না, তাই অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলিকে যাতে তারা বেশি করে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলিকে বেশি করে সক্রিয় করে তােলার জন্য উপযুক্ত কৌশল আয়ত্ত করতে শেখানাে। 

(3) পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিবিধানে সহায়তা : দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কাজকর্মগুলি করার জন্য তারা যাতে অন্যের উপর নির্ভর না করে, সেই ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া। পরিবেশের সবার সঙ্গে মানিয়ে চলার উপযােগী করে তুলতে হবে তাহলেই শিক্ষার স্বার্থকতা। 

(4) স্বনির্ভরতা অর্জন : এই শিক্ষার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হল— অন্ধ শিশুদের বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ দান করা এবং আর্থিকভাবে স্বনির্ভরশীল করে গড়ে তােলা। এতে তারা মানসিকভাবেও দৃঢ় হবে।

(5) জ্ঞান অর্জনে সহায়তা : তারা যাতে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে, সেই সুযােগ করে দেওয়া এই শিক্ষার। অন্যতম উদ্দেশ্য। চোখে দেখতে না পেলেও অন্যান্য ইন্দ্রিয়গুলির মাধ্যমে যাতে তাদের সুপ্ত ক্ষমতার বিকাশ লাভ করতে পারে সেই ব্যাপারে সাহায্য করা।

(6) যথাযােগ্য মনোভাব গঠন করা : মানসিকভাবে যাতে তারা পিছিয়ে না থাকে, তাই তাদের মধ্যে যথাযােগ্য মনােভাব গড়ে তুলতে হবে। অন্যান্য শিশুদের মতাে সমাজে তাদেরও যে সমান গ্রহণযােগ্যতা আছে, সমান অধিকার ও কর্তব্য আছে, সমাজে তারাও বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যথাযােগ্য অবদান রাখতে সক্ষম এইসকল মনােভাব গঠন করা এই শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য।

(৭) বিশেষ মানসিক ক্ষমতার প্রয়ােগ : এইসকল শিশুরা যাতে তাদের নিজস্ব মানসিক ক্ষমতা ও প্রবণতা অনুযায়ী এগিয়ে চলতে পারে এবং সেগুলি বাস্তবে প্রয়ােগ করে স্বনির্ভর হতে পারে, সেই ব্যাপারেও তাকে সহযােগিতা করা এই শিক্ষার বিশেষ উদ্দেশ্য।

সমস্যামূলক আচরণ সংশোধনের উদ্দেশ্যে ক্রীড়া ভিত্তিক চিকিৎসা সম্পর্কে আলােচনা করাে।


মনস্তত্ত্বমূলক নাটকাভিনয় পদ্ধতি বলতে কী বোঝো?


আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এবং স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষের বিভিন্ন শিক্ষা কমিশনে অক্ষম শিশুদের শিক্ষা সম্পর্কীয় বিষয়ে কী বলা হয়েছে?