অনুবর্তন বলতে কী বােঝাে | অনুবর্তন প্রক্রিয়ার শ্রেণিবিভাগ করাে।

অনুবর্তন

প্রাণীদের আচরণের প্রকৃতি অনুশীলন করাকে সাধারণত অনুবর্তন বলা হয়ে থাকে। যে প্রক্রিয়ায় মূল উদ্দীপকের সঙ্গে যুক্ত গৌণ উদ্দীপকগুলি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকে অনুবর্তন প্রক্রিয়া বলে। এক্ষেত্রে গৌণ উদ্দীপককে স্বাভাবিক উদ্দীপকের সঙ্গে বারবার উপস্থাপন করার জন্য স্বাভাবিক উদ্দীপকের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সংযােগ স্থাপিত হয়। ফলে একসময় গৌণ উদ্দীপকের উপস্থিতি ঘটলেই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তখন তাকে অনুবর্তন বলে।

যেমন- খাদ্য দেখলে কুকুরের লালাক্ষরণ। এখানে খাদ্য হল স্বাভাবিক উদ্দীপক এবং লালাক্ষরণ স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু প্যাভলভের পরীক্ষায় খাদ্যের সঙ্গে ঘণ্টাধ্বনি এই গৌণ উদ্দীপকের উপস্থাপনায় লালাক্ষরণ এই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সংযােগ স্থাপিত হয়। পরবর্তীকালে ঘণ্টাধ্বনি শুনেই কুকুরের লালাক্ষরণ হওয়া অনুবর্তনের উদাহরণ।

অনুবর্তনের শ্রেণিবিভাগ

অনুবর্তন প্রক্রিয়া দুই ধরনের হয়ে থাকেㅡ

(১) প্রাচীন অনুবর্তন : রাশিয়ান শারীরতত্ত্ববিশারদআইভান প্যাভলভ। এই প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করেন ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে। এই শিখন কৌশলে কৃত্রিম উদ্দীপকের উপস্থিতিতে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ঘটানাে হয়। এই প্রক্রিয়াকে বলে প্রাচীন অনুবর্তন।

(২) সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন : আমেরিকান মনােবিদ বি এফ স্কিনার এই তত্ত্বের প্রবক্তা। প্রাণীর কিছু কিছু আচরণের সঙ্গে নির্দিষ্ট উদ্দীপক যুক্ত থাকে। স্কিনার যার নাম দিয়েছেন রেসপনডেন্ট (Respondent)। আরও এক ধরনের আচরণ আছে যার সঙ্গে কোনাে উদ্দীপক যুক্ত থাকে না। স্কিনার এর নাম দিয়েছেন অপারেন্ট। এক্ষেত্রে শক্তিদায়ী উদ্দীপকের সাহায্যে প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা বাড়ানাে হয়।