৪৫নং এবং ৪৬নং ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের মতামত আলােচনা করাে।

ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং এবং ৪৬নং ধারা ভারতীয় জনগণের ৪ শিক্ষার অধিকারের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ৪৫নং ধারাটি শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা এবং ৪৬নং ধারাটি অনুন্নত তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি শ্রেণির লােকেদের শিক্ষার কথা ব্যক্ত করেছে।

৪৫নং ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের অভিমত

ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, সংবিধান প্রণয়নের ১০ বছরের মধ্যে ১৪ বছর বয়স সম্পূর্ণ না হওয়া সকল শিশুদের জন্য রাষ্ট অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করবে।

উপরােক্ত নির্দেশ পূরণ না হওয়ার কারণ সম্পর্কে কোঠানি কমিশনের ব্যাখ্যা হল— জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, জাতীয় সংহতির অভাব, অশিক্ষা-কুশিক্ষা, নিরক্ষর পিতা-মাতা, নারীদের শিক্ষা থেকে দূরে রাখা এবং সর্বোপরি দারিদ্র্য।

এই অভাব দূর করার জন্য কোঠারি কমিশন কয়েকটি সুপারিশ করে। যথা—

(১) দেশের প্রতিটি রাজ্যকে প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

(২) আর্থিক উন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে।

(৩) অপচয় ও অনুন্নয়ন রােধ করতে হবে।

(৪) ১৯৭৫-৭৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সমস্ত শিশুকে ৫ বছর ব্যাপী উৎকৃষ্ট ও কার্যকর শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

(৫) প্রতিটি শিশুর বাড়ির স্বল্প দূরত্বের মধ্যে বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।

(৬) পিতা-মাতা যাতে যথাসময়ে প্রথম শ্রেণিতে ভরতি করায়, তা আইনের মাধ্যমে সুনিশ্চিত করা।

৪৬নং ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশনের মতামত

সংবিধানের ৪৬নং ধারা সম্পর্কে কোঠারি কমিশন এই অভিমত প্রকাশ করেছে যে, ভারতের দুর্বলতর শ্রেণির বিশেষত তপশিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণির শিক্ষা এবং পিছিয়ে পড়া ও অনুন্নত শ্রেণির মানুষদের অবস্থার উন্নতির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তপশিলি শ্রেণি শিক্ষাগত যে সুবিধা ভােগ করছে তা চালু রাখা এবং হােস্টেল নির্মাণের সুপারিশ করেছে। কোঠারি কমিশন তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য ইউ এল ধেবর-এর সভাপতিত্বে যে কমিশন গঠিত হয়েছিল তাদের সুপারিশের সঙ্গে একমত হয়েছিলেন এবং কতকগুলি বিশেষ ক্ষেত্রে মনােযােগী হতে বলেছেন, যথা—

(১) তপশিলি জাতি ও উপজাতি অণ্ডলে আশ্রম-স্কুল স্থাপন করতে হবে।

(২) এই সমস্ত স্কুলের শিক্ষকদের উপজাতি ভাষা জানতে হবে। 

(৩) মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রদের ছাত্রাবাসে থাকার সুযােগ দিতে হবে। 

(৪) উচ্চতর মাধ্যামিক স্তরে বৃত্তির কর্মসূচি বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। 

(৫) উপজাতি অঞ্চলে কাজ করার জন্য সংস্কৃতিমনস্ক উপজাতি যুবক যুবতীদের নির্বাচন করে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।

(৬) যেসকল শিক্ষক উপজাতি অঞ্চলে শিক্ষকতার কার্যে নিযুক্ত হবেন তাদের বিশেষ শিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। 

(৭) উপজাতিদের মধ্যে কাজ করার জন্য সরকারি স্তরে বিশেষ পদ তৈরি করতে হবে।

ভারতীয় সংবিধানে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা বণ্টনের জন্য যে তালিকাব্যবস্থা রয়েছে, তা আলােচনা করাে। ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত নাগরিকদের মৌলিক কর্তব্যগুলি কী কী?


যুগ্ম তালিকা সম্বন্ধে সাংবিধানিক শিক্ষাসংক্রান্ত সুপারিশটি আলােচনা করাে।


ভারতীয় সংবিধানের শিক্ষা-সম্পর্কিত ধারা | ভারতীয় সংবিধানের কেন্দ্রীয়, রাজ্য ও যৌথ তালিকার অন্তর্গত ধারা | ভারতীয় সংবিধানে বর্ণিত শিক্ষাসংক্রান্ত সুপারিশ