বাঞ্ছিত আগ্রহ সৃষ্টিতে শিক্ষার ভূমিকা লেখাে।

বাঞ্ছিত আগ্রহ সৃষ্টিতে শিক্ষার ভূমিকা

শিক্ষার একটি বিশেষ লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীকে অভিযােজনে সাহায্য করা। এই অভিযােজনের জন্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিকে আগ্রহের প্রয়ােজন হয়। তাই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাণিত আগ্রহ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য। এর জন্য প্রয়ােজনীয় বিষয়গুলি হল一

(1) স্বাস্থ্যের বিকাশ: শিশুর দৈহিক সুস্থতা এবং মানসিক সুস্থতা আগ্রহ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। তাই শিক্ষার্থীর দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। যেমন- দৈহিক স্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত খেলাধুলা, ব্যায়াম প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বৌদ্ধিক অনুশীলনের ব্যবস্থা থাকবে।

(2) সমাজ পরিবেশ : বিভিন্ন সমাজ পরিবেশের মধ্যে বড়াে হওয়ার দরুন শিশুর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ের প্রতি আগ্রহ দেখা যায়। প্রত্যেক সমাজের কতকগুলি আচরণমূল্য আছে। সমাজ যেমন সামগ্রিকভাবে আচরণগত দিক থেকে শিশুর সামাজিক বিকাশে সহায়তা করে, তেমনি তার আগ্রহের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে দেয়। তাই বিদ্যালয়ে পাঠরত শিক্ষার্থীদের আগ্রহের উপর গুরুত্ব দিতে হয়।

(3) শিক্ষার পরিকল্পনা : শিক্ষার্থীদের আগ্রহের উপর ভিত্তি করে শিক্ষার পরিকল্পনা করতে হবে।বস্তুর অভিজ্ঞতার সঙ্গে সংগতিস্থাপন করে পাঠ্যবিষয়বস্তু নির্বাচন করতে হবে।

(4) শিক্ষার্থীদের জীবনবিকাশের ধারা : শিক্ষার্থীদের জীবনবিকাশের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সমাজে সম্পূর্ণভাবে সচেতন থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা তাদের শিক্ষাদান করবেন।

(5) বৈচিত্র্যযুক্ত পাঠক্রম ও শিক্ষণ পদ্ধতি : পাঠদানকালে যাতে শিক্ষার্থীদের একঘেঁয়েমি না আসে সেই বুঝে নিত্যনতুন শিক্ষণ পদ্ধতি প্রয়ােগ করবেন শিক্ষক-শিক্ষিকা যাতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।

(6) বই পড়ায় উৎসাহদান : পঠনের প্রতি শিক্ষার্থীর আগ্রহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে শিক্ষক ও অভিভাবকরা বিভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা বই পড়তে উৎসাহ দেবেন।

(7) আগ্রহভিত্তিক শিক্ষা : শিক্ষা হবে শিশুর আগ্রহভিত্তিক। এর ফলে শিক্ষার্থীর বিকাশে এই আগ্রহ পরােক্ষভাবে ভূমিকা পালন করবে।

(8) আরােহী পদ্ধতি : আরােহী পদ্ধতিতে পড়ালে সহজ থেকে জটিলের দিকে বিষয়টি এগােতে থাকে ফলে শিক্ষার্থীরা তা সহজে  গ্রহণ করতে পারবে।

উপরােক্ত আলােচনা থেকে বলা যায়, শিক্ষার অন্যতম উপাদান।  আগ্রহ শিক্ষার্থীর বিকাশে ও তার মধ্যে প্রয়ােজনীয় আগ্রহ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। তাই শিক্ষক ও অভিভাবকদের এ বিষয়ে বিশেষ সচেতন হওয়া এবং প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা অবলম্বন করা উচিত।