যে নীতিগুলির উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন (একুশ শতক ) তাদের কর্মপদ্ধতি স্থির করেছে সেগুলি লেখো।

আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন কর্মপদ্ধতি

আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন যে দিকগুলির উপর ভিত্তি করে তাদের কর্মপদ্ধতি স্থির করেছিল সেগুলি হল— (a) শিক্ষা ও সংস্কৃতি (Education and Culture), (b) শিক্ষা নাগরিকত্ব Education and Citizenship), (c) শিক্ষা ও সামাজিকতার মেলবন্ধন (Education and Social Cohesion), (d) শিক্ষা, কর্ম ও নিয়োগ education, Work and Employment), (e) শিক্ষা ও উন্নয়ন Education and Development), (f) শিক্ষা গবেষণা এবং বিজ্ঞান Education, Research and Science)।

আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন (একুশ শতক) বিশ্বের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে আলােচনা করে। এই মতামত ও পর্যালোচনা ভিত্তিতে কতগুলো নীতির কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করে।

নীতিগুলি ব্যাখ্যামূলক আলোচনা

একুশ শতকে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন (The International Education Commission on Education for the 21st Century) নিম্নোক্ত নীতিগুলির উপর ভিত্তি করে কর্মপদ্ধতি স্থির করে─

(১) শিক্ষা মৌলিক অধিকার: শিক্ষা হল মানুষের মৌলিক অধিকার ও সর্বজনীন মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে।

(২) প্রথাগত ও প্রথা মুক্ত: শিক্ষা হবে প্রথাগত এবং প্রথামুক্ত যা সমাজের হাতিয়ার হয়ে সৃষ্টি, অগ্রগতি ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করবে। প্রথাগত ও প্রথামুক্ত শিক্ষার মাঝে যে কৃত্রিম দেয়াল বা বাধা আছে তাকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।

(৩) তিনটি মূল কর্মনীতি: শিক্ষার তিনটি মূল কর্মনীতি- নিরপক্ষেতা (Equity), প্রাসঙ্গিকতা (Relevance) এবং উৎকৃষ্টতা (Excellence) অবশ্যই বলবৎ থাকবে।

(৪) শিক্ষার সংস্কার নবীকরণ: শিক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তন করতে হবে এবং উপযুক্ত যােগ্যতার ভিত্তিতে শংসাপত্র প্রদান করা হবে।

(৫) দায়বদ্ধতা: সমাজের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত মানুষের দায়বদ্ধতা শিক্ষার মধ্যে জড়িয়ে থাকবে।

(৬) বিবিধ বিষয়ের উন্নয়ন: UNO-র মৌলিক মূল্যবোেধ যেমন মানবাধিকার, গণতন্ত্র, দায়িত্ববােধ, সাংস্কৃতিক ঐক্য, জ্ঞানের আদান প্রদান, দারিদ্র্য দূরীকরণ, সাংস্কৃতিক পরিচিতি, সুস্বাস্থ্য, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির উন্নতির লক্ষ্যে বিবিধ প্রয়াস নেওয়া হবে।

(৭) সহযােগিতা ও সহমর্মিতা: শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযােগিতা ও সহমর্মিতার ভিত্তিতে কর্মোদ্যোগে অংশগ্রহণ করবে।

(৮) শিক্ষাপদ্ধতির স্বাধীনতা: শিক্ষা হবে মুক্ত বা স্বাধীন। তা কখনােই শিক্ষালয়ের চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ হবে না।

(৯) কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব: শিক্ষার বিকেন্দ্রীকরণ এবং উৎকর্ষ সাধনে জাতীয় কর্তৃপক্ষকে প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। 

আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন উপরোক্ত বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে তাদের কর্মপদ্ধতি স্থির করেছিল।