জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা আলােচনা করাে।

জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষা বা জানার জন্য শিক্ষা বলতে বোঝায় সেই শিখন প্রক্রিয়াকে, যা শিক্ষার্থীকে বিশ্বজগতের বিভিন্ন বস্তু সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে স্মৃতি, কল্পনা, বিচারবুদ্ধি, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বিকশিত হয়।

জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

মানব মনে উদ্ভূত নানান প্রশ্নের সমাধানসূত্র হল জ্ঞানের অন্বেষণ। প্রকৃত জ্ঞান মানুষের যেমন নানান জিজ্ঞাসার উত্তর দিয়ে থাকে, তেমনি তার অন্যান্য সকল দিকের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। নিম্ন শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা সম্পর্কে আলােচনা করা হল—

(১) আত্মনির্ভরতা অর্জন : জ্ঞান মানুষকে আত্মসক্রিয় করে তােলে। আত্মসক্রিয়তা আত্মপ্রত্যয়কে সুদৃঢ় করে, যা ব্যক্তিকে আত্মনির্ভরতা অর্জনে সাহায্য করে।

(২) স্বাধীন চিন্তার বিকাশ: জ্ঞান মানুষের স্বাধীন চিন্তার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।

(৩) নতুন সৃষ্টিতে অনুপ্রেরণা: মানুষের জিজ্ঞাসা জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে। আর সেই জ্ঞান নতুন নতুন সৃষ্টিতে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে তােলে।

(৪) মুক্তির সন্ধান: জ্ঞান মানুষের মন থেকে নিরক্ষরতার অন্ধকার দূর করে এবং মনে জ্ঞানের আলোর সার ঘটায়। আর সেই আলোতে মানুষের মুক্তি ঘটে।

(৫) মানুষকে আনন্দদান: জ্ঞান মানুষের মনকে পরিপূর্ণ করে তােলে। মনের মধ্যে প্রশান্তি আনে।

(৬) অভিযােজনে সহায়ক: সদাপরিবর্তনশীল সমাজের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে গেলে সঠিক শিক্ষার প্রয়ােজন। সঠিক জ্ঞান মানুষকে মুক্তির পথ দেখায়, নতুন পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনের সাহায্য করে।

(৭) আত্মােপলব্ধিতে সহায়ক: জ্ঞানার্জনের শিক্ষা মানুষকে অন্ধকার থেকে আলাের দিকে নিয়ে যায়। সঠিক জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়েই সে নিজেকে উপলদ্ধি করতে পারে, সত্যের পথে নিজেকে চালিত করতে পারে।

(৮) আত্মবিশ্বাসের সহায়ক: জ্ঞান মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তােলে। যে-কোনাে পরিস্থিতিতে মােকাবিলা করতে সক্ষম হয় এবং সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

(৯) বিশ্বজগৎ সম্পর্কে জ্ঞান: আমাদের চারপাশে যেসকল বিষয়বস্তু রয়েছে এবং যেসকল ঘটনা ঘটে, সে সম্পর্কে আমরা সহজে জ্ঞান লাভ করতে পারি।

(১০) সৃজনক্ষমতার বিকাশ: জ্ঞান মানুষের অন্তর্নিহিত সৃজনক্ষমতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ জ্ঞান সৃজনক্ষমতা বিকাশে নানাভাবে সাহায্য করে।

(১১) মূল্যবোধ সৃষ্টি: জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মূল্যবােধের বিকাশ ঘটায়। শিক্ষার্থীর মধ্যে সহযােগিতা, শ্রদ্ধা, সহানুভূতি, সহমর্মিতা গঠন ইত্যাদির মাধ্যমে মূল্যবােধের বিকাশ ঘটে।

জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষা প্রতিটি শিক্ষার্থীকে পরিপূর্ণভাবে বিকাশের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। পরিবার থেকে শুরু করে বৃহত্তর কর্মজীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করার মূল চাবিকাঠি হল প্রকৃত জ্ঞানার্জন। তাই শিক্ষার চারটি মৌলিক উদ্দেশ্যের মধ্যে জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষাকে প্রথম স্থানে রাখা হয়েছে।

জ্যাক্স ডেলরের মতানুযায়ী শিক্ষার চারটি স্তম্ভ সংক্ষেপে আলােচনা করাে। অথবা, শিক্ষার উদ্দেশ্যের প্রেক্ষিতে শিখন কী কী?


যে নীতিগুলির উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক শিক্ষা কমিশন (একুশ শতক ) তাদের কর্মপদ্ধতি স্থির করেছে সেগুলি লেখো।


জানার জন্য শিক্ষা বক্তব্যটির অর্থ নিজের ভাষায় লেখা অথবা, জ্ঞানার্জনের জন্য শিক্ষার প্রয়ােজনীয়তা আলােচনা করাে।