বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার সম্পর্ক লেখো।

বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। এই দুই শিক্ষাই মানুষকে স্বাবলম্বী করে। শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য ব্যক্তিকে নিজের পায়ে দাঁড় করানাে অর্থাৎ বৃত্তিমুখীকরণ তা পূর্ণ করতে সাহায্য করে। বৃত্তিমুখী শিক্ষা ব্যক্তিকে বিশেষ কোনো বৃত্তি সম্পর্কে জ্ঞান বা দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে। আর কারিগরি শিক্ষা ব্যক্তিকে প্রযুক্তিগত অর্থাৎ technology-কে কাজে লাগিয়ে যন্ত্রপাতির ব্যবহার করে শিক্ষার বৃত্তিমুখী প্রশিক্ষণ দান করে।

বৃত্তিমুখী শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক

(১) শিক্ষার লক্ষ্য: উভয় শিক্ষার লক্ষ্য হল ব্যক্তিকে স্বাবলম্বী করে তােলা এবং ব্যক্তিকে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা।

(২) পাঠক্রম : উভয় শিক্ষার পাঠক্রম পৃথক পৃথক। প্রত্যেকটি বৃত্তি অনুযায়ী পাঠক্রম আলাদা আলাদা।

(৩) দক্ষতা অর্জন : উভয় প্রকার শিক্ষাই সমাজকে সুদক্ষ কর্মী সরবরাহ করে।

(৪) চাহিদা নির্ভর : উভয় ধরনের শিক্ষাই ব্যক্তির চাহিদা কেন্দ্রিক।

(৫) ব্যবহারিক জ্ঞান : উভয় প্রকার শিক্ষাই ব্যক্তিকে ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে।

(৬) জাতীয় উন্নয়নমুখী : উভয় প্রকার শিক্ষাই জাতীয় উন্নয়নে সহায়তা করে।

(৭) কর্মনির্বাচনি শিক্ষা : শিক্ষার্থী মেধা অনুযায়ী উভয় প্রকার শিক্ষা থেকেই তার উপযুক্ত কর্ম নির্বাচন করতে পারে।

(৮) সমভাবে বন্টিত নয় : বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষা সমভাবে বর্ণিত নয়, এর ফলে সমাজে সবস্তরে শিক্ষার্থীরা সমান সুযােগ পায় না।

(৯) ব্যতিক্রমী শিশুদের সুযোগ : বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুরা উৎপাদন মূলক কাজ করতে দেখে যা তাদের স্বনির্ভরতার সুযোগ এনে দেয়। কিছু কিছু কারিগরি শিক্ষামূলক কোর্স ব্যাতিক্রমী শিক্ষার্থীদের জন্য সুফলদায়ক হয়।

(১০) প্রয়োগমূলক : উভয় প্রকার শিক্ষা ব্যবহারিক জ্ঞানার্জনে সাহায্য করে এবং কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে।

(১১) আর্থিক উন্নতি : উভয় শিক্ষায় ভবিষ্যৎ কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আনে।

(১২) জাতীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার : বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে সুদক্ষ কারিগর তৈরি হয়। এর ফলে জাতীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি ঘটে, জাতীয় সম্পদের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।

(১৩) সৃজনশীলতার বিকাশ : দু-ধরনের শিক্ষাই মানুষের দক্ষতা আরও বৃদ্ধি করে ফলে ব্যক্তির সৃজনশীল ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটে।

(১৪) জ্ঞানবৃদ্ধি : উভয় ধরনের শিক্ষায় নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান বৃদ্ধি ঘটায়। যার ফলে সেই শাখাটি সম্পর্কে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায় কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে।

(১৫) শ্রমের প্রতি মর্যাদা : বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা শ্রমের প্রতি মর্যাদা বৃদ্ধি করে।

(১৬) সাধারণ পাঠক্রমহীনতা : উভয় ধরনের শিক্ষায় কোন সাধারণ পাঠক্রম থাকে না, তবে কিছু সাধারণ শিক্ষার প্রয়ােজন হয়।