উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে আলােচনা করাে। বর্তমান ভারতে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।

উচ্চমাধ্যমিক স্তর বৃত্তিমুখি ও কারিগরি শিক্ষা

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার জন্য কোঠারি কমিশন নিম্নলিখিত সুপারিশ গুলি করে।

(১) কর্মীদের প্রশিক্ষণ: মাধ্যমিক পাশ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

(২) কর্মদক্ষতামূলক কোর্স : চাকরিরত শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পলিটেকনিক কলেজ এবং কৃষি শিক্ষা মূলক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন কর্ম দক্ষতামূলক কোর্স চালু করা।

(৩) পূর্ণ সময় ও আংশিক সময়ের শিক্ষা : শিক্ষার্থীদের পূর্ণ সময়ে কিংবা আংশিক সময়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। যেমন—পলিটেকনিক ও আই টি আই শিক্ষা।

(৪) বহুমুখী কোর্স :দশম ক্লাস পাশ করার পর অন্যান্য বহুবিধ কোর্সের ব্যবস্থা করতে হবে যেমন—পৌলট্রি ফার্মিং, টেলারিং, নার্সিং, ক্ষুদ্র শিল্প, বাণিজ্য, সার্ভে ইত্যাদি যেগুলি আংশিক সময়ের মাধ্যমে অথবা ডাক যোগের মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হবে। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তিমুখী শিক্ষার ক্ষেত্রে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলি হল —
  • দুটি ভাষা বাধ্যতামূলক মাতৃভাষা ও ইংরেজিকে আবশ্যিক করা হয়েছে। 
  • পরীক্ষাগার ভিত্তিক ও পরীক্ষাগারে বিহীন কতগুলি বিষয় কি ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে ধরা হয়।
  • বৃত্তিমূলক বিষয়সমূহের অন্তর্গত ক্ষেত্র হল ৫টি যেখান থেকে যে-কোনাে একটি বিভাগ নির্বাচন করতে হয় যথা—কৃষিবিজ্ঞান বিভাগ, বয়ন শিল্প বিভাগ, ব্যবসা বাণিজ্য বিভাগ, প্যারামেডিক্যাল বিভাগ, কারিগরি বিভাগ।

বর্তমানে ভারতে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা

ভারতে বর্তমানে প্রচলিত বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন কোর্স গুলি হল—(১) নার্সিং (২) কৃষিবিজ্ঞান (৩) গৃহসজ্জা (৪) ব্যবসাবাণিজ্য, (৫) সিনেমাটোগ্রাফি (৬) সাংবাদিকতা (৭) কম্পিউটার (৮) আইনশাস্ত্র,  (৯) সংগীত ও নাটক বিভাগ ইত্যাদি।

(১) নার্সিং : মাধ্যমিকের পর শিক্ষার্থীরা নার্সিং কোর্সের ট্রেনিং নিতে পারবে।

(২) কৃষিবিজ্ঞান : কৃষিবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানগুলিতে কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় মাধ্যমিক পাশ করার পর। যেমন—উদ্যানপালন, চাষবাস ইত্যাদি।

(৩) গৃহসজ্জা : মাধ্যমিক পাশের ডিগ্রির পর গৃহের বিভিন্ন ঘরের অবস্থান কেমন হবে, তার পরিচর্যা, ডিজাইন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কোর্স করানো হয়।

(৪) ব্যাবসা বাণিজ্য : ব্যবসা বাণিজ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স করানো হয়।

(৫) সিনেমাটোগ্রাফি : সিনেমা তৈরি, এডিটিং, ইত্যাদি বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে কোর্স করানো এ ছাড়া থাকে ফটোগ্রাফি, স্ক্রিপট লেখা, ভিডিওগ্রাফি, নিদের্শনা ইত্যাদি বিষয় সংক্রান্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়েছে। যেমন—সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট।

(৬) সাংবাদিকতা : সাংবাদিকতা সম্বন্ধীয় বিভিন্ন বিষয় কোর্সের আকারে পড়ানো হয়। 

(৭) কম্পিউটার : কম্পিউটার হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যারের সম্বন্ধীয় বিভিন্ন কোর্স করানো হয় বিভিন্ন সময় মেয়াদি।

(৮) আইনশাস্ত্র : আইনশাস্ত্র সম্পর্কিত বিষয় সমূহ পড়ানো হয় উচ্চমাধ্যমিকের পর। এই সংক্রান্ত প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়।

(৯) সংগীত ও নাটক বিভাগ : সংগীত ও নাটক নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন এম এ ডিগ্রি করার ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন—রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই বিষয়ে কোর্স করানো হয়।

বর্তমানে প্রচলিত জুনিয়র টেকনিক্যাল স্কুল এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সম্পর্কে আলােচনা করাে।


বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার সমস্যার সমাধান আলােচনা করাে।


কমিশন কী উদ্দেশ্যে সাধারণ বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে? এই ধরনের বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? কেন কমিশন বিদ্যালয় গুচ্ছের স্থাপনের সুপারিশ করে?