মুক ও বধির শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কী?

যেসব শিশু কথা বলতে পারে না তাদের মূক (Dumb) এবং যেসকল শিশু শুনতে পায় না, তাদের বধির (Deaf) বলে।

মূক ও বধির শিশুদের শিক্ষার উদ্দেশ্য

(১) ভাষার বিকাশ: মূক ও বধির শিশুদের শ্রবণযন্ত্র ও বাগযন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য কি ভাষার বিকাশ ঘটানো, চিন্তন ক্ষমতা ও যুক্তিশক্তির বিকাশে সাহায্য করে। বিশেষ করে অন্যের ভাষা বুঝতে পারা এবং নিজের মনের ভাব প্রকাশ করার প্রশিক্ষণ দেওয়া।

(২) সামাজিক বিকাশে সহায়তা : সামাজিক বিকাশে সহায়তা করা হল শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য। কথা বলা ও শোনার অক্ষমতার দরুন এদের সামাজিক ভাববিনিময় অসুবিধা হয়ে পড়ে। তাই তাদের সামাজিক ভাব বিনিময়ে সাহায্য করা প্রয়োজন।

(৩) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়তা : নিজের অক্ষমতার দারুন এরা সর্বদা হীনমন্যতায় ভোগে। তার শিক্ষার কাজ হল তাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।

(৪) শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া : মূক ও বধির শিশুদের আর-একটি কাজ হল শ্রবণমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া। বিভিন্ন শ্রবণ সহায়ক যন্ত্র যেমন- অডিওমিটার যন্ত্রের সাহায্যে দেখা গেছে খুব ক্ষীণ শ্রবণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে কিছুটা শ্রবণ ক্ষমতার অধিকারী করে তোলা যায়।

(৫) বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দান : মূক ও বধির শিক্ষার্থীদের যাতে ভবিষ্যতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বনির্ভর হতে পারে, সেই ব্যাপারে সহায়তা করা শিক্ষার একটি উদ্দেশ্য।

(৬) পঠনপাঠন ক্ষমতার বিকাশ : বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে শিক্ষার একটি উদ্দেশ্য।

(৭) অভিভাবকদের প্রশিক্ষণ দান : শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল মূক ও বধির শিশুদের অভিভাবক-অভিভাবকদের শ্রবন মূলক প্রশিক্ষণ দান করা। এই প্রশিক্ষণ পেলে তারা তাদের সন্তানদের প্রয়োজনে সাহায্য করতে সক্ষম হবেন।

(৮) সহপাঠক্রমিক কার্যাবলির ব্যবস্থা : মূক ও বধির শিশুদের অন্যান্য ক্ষমতা গুলির যথাযথ বিকাশে সহায়তা করা, শিক্ষার আর- একটি উদ্দেশ্য। বিভিন্ন খেলাধুলা, হাতের কাজ, অঙ্কন প্রভৃতি সহপাঠক্রমিক কাজ গুলোর মাধ্যমে তাদের সৃজনশীল ক্ষমতার বিকাশ হবে।

(৯) উপযুক্ত কতকগুলি কৌশল গ্রহণ : শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল এদের সহায়তার জন্য কতকগুলি কৌশল অবলম্বন করা। যেমন— ক্লাসে সামনের সারিতে বসার ব্যবস্থা করা, স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করা, সর্বোপরি শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের সাহায্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া ইত্যাদি।

সব কিছু প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী সমাজ জীবনে বেঁচে থাকার প্রেরণা যোগাবে এই শিক্ষার চরম উদ্দেশ্য। সেইজন্য আরও উন্নত শিক্ষণ পদ্ধতি গড়ে তােলা দরকার।

মূক ও বধির শিশু কাদের বলে? সাধারণত কী কারণে এরা মূক ও বধির হয়? অথবা, শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার কারণ


মূক ও বধির শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানের যে-কোন চারটি পদ্ধতি আলােচনা করাে। অথবা, শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষণ পদ্ধতি আলােচনা করো।


দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ও মূক বধির শিশুদের শ্রেণিকক্ষে আচরণগত সমস্যা আলােচনা করাে।