প্রতিবন্ধী কাদের বলা হয়? প্রতিবন্ধী শিশুদের শ্রেণিবিন্যাস করো।

প্রতিবন্ধী

যে সকল শিশুর দৈহিক, মানসিক ইত্যাদি ত্রুটির কারণে নির্দিষ্ট মাত্রায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় অক্ষম, তাদের প্রতিবন্ধী বলে। অর্থাৎ যেসকল শিশুদের দৈহিক বা মানসিক দিক থেকে স্বাভাবিক বা গড় শিশুদের বিচারে যথেষ্ট পার্থক্য লক্ষ করা যায়, তাদের বলে প্রতিবন্ধী

সাধারণভাবে 'ব্যতিক্রমধর্মী শিশু' কথাটির সমার্থক শব্দ হিসেবে কতকগুলি শব্দ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন— অক্ষম (Disabled), ব্যাহত (Impaired), বিশেষ ধর্মী (Special), প্রতিবন্ধী (Handicapped) ইত্যাদি। শব্দগুলো আমরা অনেক সময় একই অর্থে ব্যবহার করলেও ধারণাগত পার্থক্য আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) 1976 খ্রিস্টাব্দে এই সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিয়েছে।

প্রতিবন্ধী সম্পর্কিত ব্যাখ্যা

(১) ব্যাহত (Impairment) : ব্যাহত বলতে অঙ্গসংস্থান গত বা পেশাগত প্রতিবন্ধকতা যা বিশেষ কাজে বাধা সৃষ্টি করে কিন্তু সামগ্রিকভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না।

(২) অক্ষমতা (Disability) : শারীরিক গঠন বা অঙ্গসংস্থান গত অসুবিধা অথবা পেশিগত অসুবিধা সৃষ্টিকারী শারীরিক বৈশিষ্ট্য হল অক্ষমতা, যা পরে চিকিৎসার মাধ্যমে কমিয়ে আনা যায়।

(৩) প্রতিবন্ধী (Handicapped) : ব্যাহত ও অক্ষমতার প্রভাবে কোনো ব্যক্তি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া করতে বাধার সম্মুখীন হয় তখন তাদের বলে প্রতিবন্ধী বা Handicapped। যেমন কোন ব্যক্তি বর্ণান্ধ হয় তবে এর প্রভাবে কোন কাজ করতে বাধা সৃষ্টি হয়। তখন তিনি প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচিত হন। এক্ষেত্রে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছায় যা কোনোপ্রকার সংশোধনীর দ্বারা অতিক্রম করা যায় না। তখন তাকে বলে প্রতিবন্ধী। যেমন– দর্শন প্রতিবন্ধকতা।

তিনটি ধারণাকে মডেল আকারে দেখানাে যেতে পারে—Impairment (ব্যাহত) Disability (অক্ষম) →Handicapped (প্রতিবন্ধী)

প্রতিবন্ধী শিশুদের শ্রেণিবিভাগ

প্রতিবন্ধী শিশুদের শ্রেণিবিভাগ


(১) শারীরিক প্রতিবন্ধী : যে সকল শিশু কোনো-না-কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঠিকভাবে সঞ্চালনে অক্ষম তারা শারীরিক প্রতিবন্ধী। এই ত্রুটি জ্ঞানেন্দ্রিয়, কর্মেন্দ্রিয়, বাগযন্ত্রের যে কিছু হতে পারে।

(২) মানসিক প্রতিবন্ধী : যেসকল শিশুর বৌদ্ধিক কার্যাবলি এবং অভিযোজন ক্ষমতা অন্যান্য শিশুদের থেকে ভিন্ন এবং ত্রুটিযুক্ত তারা হল মানসিক প্রতিবন্ধী।

(৩) শিখন অক্ষম প্রতিবন্ধী : কোন কিছু পাঠ করতে, লিখতে, গণিতের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে যে সকল শিশু সমস্যার সৃষ্টি হয়, তারা হল শিখনে অক্ষম প্রতিবন্ধী। তাদের শিখন হয় ত্রুটিযুক্ত।

(৪) সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধী : যারা নিম্ন আর্থসামাজিক পরিকাঠামো বড় হয়েছে সেই সকল শিশুরা একটা অন্তর্দ্বন্দ্বের মধ্যে থাকে। বিশেষত যেসকল শিশু আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত, বনাঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চলের বাসিন্দা তাদের শহরের সাধারণ শিশুদের সঙ্গে মিশতে বা অভিযোজনে অসুবিধা হয়। যা বিদ্যালয় অপচয় ও অনুন্নয়ন কে বাড়িয়ে তোলে।

(৫) প্রক্ষোভিক প্রতিবন্ধকতা : অনেক শিশু আছে যারা নিজেদের কাজের সঠিক প্রশংসা, মর্যাদা পায় না বা কোনাে কারণে তাদের কাজ অন্যের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, এদের মধ্যে একটা অন্তর্দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এই কারণে প্রাক্ষোভিক প্রতিবন্ধকতা দেখা যায়। এই প্রক্ষোভের মাত্রা বিভিন্ন হয়।

POA-1992 -এর পটভূমি কি। POA-1992-এর মূল বিষয়গুলো লেখাে। রামমূর্তি কমিটি ও জনার্দন কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে তদানীন্তন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী অর্জুন সিং-এর প্রস্তাবে যে দুটি স্তবক সংযোজন হয় সেগুলো বিবৃত করো।


যশপাল কমিটি শিক্ষার্থীদের উপর পড়াশোনার বোঝাস্বরুপ কি কি কারণ দেখিয়েছেন এবং কী কী সুপারিশ দিয়েছিল?


১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দের সংশোধিত খসড়া (জনার্দন রেড্ডি কমিটি) তুলনামূলক আলােচনা করাে।