শিক্ষকদের জীবিকা মূলক পরিস্থিতি ও তার উন্নয়ন জন্য কমিশন যে সুপারিশ | বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তার মূল্যায়ন

শিক্ষকদের জীবিকা মূলক পরিস্থিতি ও তার উন্নয়নের জন্য কমিশনের সুপারিশ

শিক্ষার অন্যতম মূল স্তম্ভ হল শিক্ষক-শিক্ষিকা। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের আদর্শ ও পাথেয় কী হওয়া উচিত, তার সঠিক পথের দিশারী হলেন শিক্ষকমণ্ডলী। তাই এদের জীবিকা মূলক পরিস্থিতির উন্নয়ন কীভাবে করা যায়, সেই বিষয়ে মুদালিয়র কমিশন (১৯৫২-৫৩ খ্রি.) কয়েকটি সুপারিশ করেছেন। তবে কমিশন সর্বদা উপযুক্ত শিক্ষাপ্রাপ্ত অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগে উদ্যোগী ছিল।

বর্তমান পরিস্থিতিতে মূল্যায়ন

কুফল : শিক্ষকদের বৃত্তিকে আকর্ষণীয় করে উচ্চ মেধা যুক্ত ছাত্রছাত্রীদের এই পেশায় উৎসাহিত করার কথা বলা হলেও বহুদিন ধরে তা অবহেলিত থেকে গেছে।

(১) শিক্ষক নিয়ােগের জন্য সমস্ত বিদ্যালয়ে একই রকমের নীতি গ্রহণ করা হয়নি।

(২) শিক্ষকদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বেতন কাঠামোতে বৈষম্য থাকার জন্য আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কমিশন শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণের জন্য কমিটি গঠনের কথা বললেও কমিটি যথাসময়ে তাদের সুপারিশ কার্যকর করার জন্য এগিয়ে আসে না।

(৩) শিক্ষকদের জন্য পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু থাকলেও বিমার প্রচলন বর্তমান সরকার করতে পারেনি। ফলে পেশাগত বৈষম্য এখনও থেকে গেছে।

(৪) শিক্ষকদের সন্তানদের বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পাবে— এ কথা বলা হলেও তা বাস্তবে কার্যকর হয়নি।

(৫) শিক্ষকদের বিনা ব্যয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হাসপাতালে চিকিৎসার কথা কমিশন বললে সরকার এ বিষয়ে কোনো সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেনি।

(৬) সবশেষে বলা হয়, শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা নিষিদ্ধ করা উচিত কিন্তু সরকারি নির্দেশিকা জারি করেও বর্তমানে গৃহশিক্ষকতা করা থেকে শিক্ষকদের বিব্রত করা যায়নি।

সুফল :

(১) তবে বেশ কিছু দাবিদাওয়া কার্যকরী করা সম্ভবও হয়েছে, যার ফলে শিক্ষকরা আজ যথেষ্ট উপকৃত। শিক্ষক নিয়োগ ও নির্বাচনের ব্যাপারে কমিশন যে সমনীতির কথা বলছে, বর্তমানে তা গৃহীত হয়েছে।

(২) মাধ্যমিক স্তরে SSC পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ফলে ধনী, দরিদ্র সকলেই সমান সুযোগ পায়।

(৩) তা ছাড়া কলেজীয় শিক্ষার ক্ষেত্রে পাস কোর্স ও অনার্স কোর্সের অধ্যাপকদের বেতন যথার্থ পার্থক্য বজায় রাখা হয়েছে। এমনকি বিএড প্রশিক্ষণকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা পূর্ণ বেতন লাভ করেন।

আমাদের ভারতের ন্যায় জনবহুল দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে বিশেষ সমৃদ্ধশালী না হওয়ায় বর্তমানে মুদালিয়র কমিশন প্রস্তাবিত সকল ব্যবস্থা কার্যকরী করা সম্ভব হয়নি। তবে অন্যান্য পেশার তুলনায় শিক্ষকতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুযোগ সুবিধা লাভ করে থাকেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন রূপ এবং সর্বার্থসাধক উচ্চ বিদ্যালয় প্রসঙ্গে মুদালিয়র কমিশনের অভিমত সংক্ষেপে লেখাে।


মুদালিয়র কমিশন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষণ পদ্ধতি বিষয়ে যেসকল মূল্যবান সুপারিশ লিপিবদ্ধ করে, তা লেখো। নির্দেশনা ও পরামর্শদান সম্পর্কে কমিশনের সুপারিশগুলি কি কি।


মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন চরিত্র গঠনের জন্য শিক্ষা বলতে কী বুঝিয়েছে? কমিশন শিক্ষামূলক ও বৃত্তিমূলক নির্দেশনার জন্য যেসব সুপারিশ করেছে, তা লেখাে।