সর্বজনীন সাক্ষরতার উদ্দেশ্য গুলি আলােচনা করাে।

সার্বজনীন সাক্ষরতা বলতে বুঝায়— ব্যক্তির দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রে শিক্ষার যথার্থ ব্যবহারকে।

সর্বজনীন সাক্ষরতার উদ্দেশ্য

(১) জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন : সর্বজনীন সাক্ষরতার উদ্দেশ্য হল সকল শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ঘটানো। প্রতিটি মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটলে জাতীয় উন্নয়ন আরও দ্রুতগতিতে ঘটবে।

(২) কুসংস্কার দূর করা : এই শিক্ষার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের মন থেকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূর করে চিন্তাভাবনাকে বিজ্ঞানসম্মত ও যুক্তিশীল করে তুলতে হবে।

(৩) শিক্ষার প্রসার ঘটানো : সর্বজনীন স্বাক্ষরতার উদ্দেশ্য হল শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে জাতীয় উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা।

(৪) মানবসম্পদের উন্নয়ন : সর্বজনীন সাক্ষরতার মাধ্যমে মানব সম্পদের সার্বিক উন্নয়ন ঘটানো আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। দেশের সমস্ত মানুষকে শিক্ষার মাধ্যমে সম্পদে পরিণত করতে হবে।

(৫) অধিকারবোধ সম্পর্কে সচেতনতা : সর্বজনীন স্বাক্ষরতার অন্যতম উদ্দেশ্য হল প্রতিটি মানুষকে তার অধিকারবােধ সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।

(৬) গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ : ভারত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ। সর্বজনীন সাক্ষরতার উদ্দেশ্য হল সেই গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ ঘটানো।

(৭) নাগরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন : নাগরিক হিসেবে প্রতিটি মানুষের দেশের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলি সম্পর্কে সচেতন হওয়া বাণী।

(৮) অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা : সাক্ষর মানুষ নিরক্ষর মানুষের থেকে অনেক বেশি কর্মদক্ষ। সাক্ষর মানুষ যেমন পরিবারের অর্থনৈতিক ভিতকে সমৃদ্ধ করে তেমনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

(৯) মানসিক বিকাশ সাধন করা : সর্বজনীন সাক্ষরতার উদ্দেশ্য হল প্রতিটি মানুষের মানসিক বিকাশ সাধন করা। অর্থাৎ চিন্তাভাবনা, বুদ্ধি, বিচারশক্তি, বিশ্লেষণী ক্ষমতার বিকাশ সাধন করা।

আলোচ্য উদ্দেশ্যগুলো পূরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য তৈরি হবে। জনগণের উন্নতি বা বিকাশের মাধ্যমে জাতীয় উন্নতি ঘটবে।