মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়। ওই শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষার গঠন ও পাঠ্যসূচি বর্ণনা করো।

গঠনকাল : মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. লক্ষ্মণস্বামী মুদালিয়র- এর সভাপতিত্বে ১৯৫২-১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়।

মাধ্যমিক শিক্ষার গঠন

কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী মাধ্যমিক শিক্ষার দুটি স্তর। vi, vii এবং viii এই তিন বছর নিয়ে নিম্ন মাধ্যমিক স্তর। আর পরবর্তী তিন বছর অর্থাৎ ix, x এবং xi নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক স্তর। মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন প্রচলিত ইন্টারমিডিয়েট স্তরের ২ বছরের শিক্ষাকালকে এক এক বছর করে ভেঙেছে। উক্ত ২ বছরের মধ্যে ১ বছর মাধ্যমিক শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং অপর ১ বছর প্রচলিত ২ বছরের স্নাতক স্তরের সঙ্গে যুক্ত করে ৩ বছরের স্নাতক স্তর গঠন করেছে। অর্থাৎ মাধ্যমিক শিক্ষা কাঠামোটি হল—

মাধ্যমিক শিক্ষা কাঠামো

মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম সম্পর্কে সুপারিশ

মাধ্যমিক শিক্ষার পাঠক্রম সম্পর্কে সুপারিশ

মুদালিয়র কমিশন শিক্ষার বিভিন্ন স্তরের জন্য নিম্নলিখিত পাঠক্রমের সুপারিশ করে। 

(A) নিম্ন মাধ্যমিক স্তর: এই স্তরের জন্য পাঠ্যসূচি হল— (১) ভাষা, (২) সামাজিক শিক্ষা, (৩) সাধারণ বিজ্ঞান, (৪) গনিত, (৫) কলা ও সংগীত, (৬) হাতের কাজ, (৭) শিল্প ও (৮) শারীরশিক্ষা।

(B) উচ্চতর মাধ্যমিক স্তর: শিক্ষার্থীর রুচি, সামর্থ্য ও প্রবণতা অনুযায়ী বহুমুখী বিষয় পড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এর মধ্যে কতকগুলি হল— (১) আবশ্যিক পাঠ্য (Core Subject) এবং কয়েকটি হবে (২) ঐচ্ছিক বিষয় (Elective)। এ ছাড়া অতিরিক্ত বিষয় (Optional Subject) থাকবে।

(১) আবশ্যিক বিষয় :
  • ভাষা: মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা অথবা মাতৃভাষা এবং প্রাচীন ভাষার মিশ্রণ।
  • ঐচ্ছিক বিষয়: নিম্নলিখিত ভাষাগুলির মধ্যে যে-কোনাে একটি— (a) হিন্দি (যাদের মাতৃভাষা হিন্দি নয়), (b) প্রাথমিক ইংরেজি (যারা আগে ইংরেজি পড়েনি), (c) ইংরেজি (যারা আগে ইংরেজি পড়েছে), (d) একটি আধুনিক ভারতীয় ভাষা (হিন্দি ছাড়া), (e) একটি আধুনিক ইউরোপীয় ভাষা (ইংরেজি ছাড়া), (f) একটি প্রাচীন ভাষা। (g) সামাজিক শিক্ষা, (h) সাধারণ বিজ্ঞান, (i) গণিত, (j) একটি শিল্প।

(২) ঐচ্ছিক বিষয়: ঐচ্ছিক বিষয়গুলিকে কমিশন যে ৭টি ভাগে ভাগ করেছে সেগুলি হল—
  • মানবিক বিজ্ঞান: প্রাচীন ভাষা বা অন্য একটি ভাষা, ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি ও সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, তর্কশাস্ত্র, গণিত,  সংগীত, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান।
  • বিজ্ঞান: পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, জীববিদ্যা, ভূগোল, গণিত, শরীর ও স্বাস্থ্য বিজ্ঞান।
  • কারিগরি: ব্যবহারিক গণিত ও জ্যামিতি অঙ্কন, ব্যবহারিক বিজ্ঞান, যন্ত্র বিজ্ঞান, তড়িৎ বিজ্ঞান।
  • বাণিজ্য: ব্যবহারিক বাণিজ্য, বুক কিপিং, বাণিজ্যিক ভূগোল, শর্ট হ্যান্ড ও টাইপ রাইটিং।
  • কৃষিবিজ্ঞান: সাধারণ কৃষিবিদ্যা, পশুপালন, উদ্যান রক্ষা ও নির্মাণ, কৃষি বিষয়ক রসায়ন বিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যা।
  • চারুকলাকলা বিদ্যার ইতিহাস, অঙ্কন ও ডিজাইন শিক্ষা,  চিত্রকলা, মডেলিং, সংগীত, নৃত্য।
  • গার্হস্থ্য বিজ্ঞান: গার্হস্থ্য অর্থনীতি, পুষ্টি ও রন্ধন বিদ্যা, মাতৃত্ব বিজ্ঞান ও শিশুপালন, সংসার পরিচালনা ও শুশ্রুষা।
(৩) অতিরিক্ত বিষয়: উপরোক্ত বিভাগের বিষয় গুলো থেকে আরও একটি বিষয়কে অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে শিক্ষার্থীরা নিতে পারবে।

মুদালিয়র কমিশন কবে, কোন কোন সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয়? ওই শিক্ষা কমিশনের বিচার্য বিষয় সমূহ আলােচনা করো।


মুদালিয়ার কমিশনের প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য কী? মুদালিয়র কমিশন প্রচলিত শিক্ষার যেসব ত্রূটি সম্পর্কে আলােকপাত করে, সেগুলি আলােচনা করাে।


মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য বিষয়ে মুদালিয়র কমিশনের সুপারিশ গুলি কী ছিল তা আলােচনা করাে।