কোঠারি কমিশন বিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে যে সূত্র বিন্যাস করেছে, সেগুলি আলােচনা করাে এবং শিক্ষার স্তর অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা উল্লেখ করো।

বিদ্যালয় শিক্ষার ক্ষেত্রে কোঠারি কমিশন প্রবর্তিত সূত্র

কোঠারি কমিশন বিদ্যালয় শিক্ষার সূত্র বিন্যাসের ক্ষেত্রে যে শিক্ষাকাঠামােটি নির্ণয় করেছে তা হল (১০+২+৩+২) অর্থাৎ দশ বছরের মাধ্যমিক শিক্ষা, দুই বছরের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা, তিন বছরের স্নাতক শিক্ষা ও ২ বছরের স্নাতকোত্তর শিক্ষার কথা বলা হয়েছে। আমরা বিদ্যালয় শিক্ষা বলতে (১০+২) = ১২ বছরের শিক্ষাকে বুঝি।

(১) প্রাক-প্রাথমিক স্তর: এক থেকে তিন বছর স্থায়িত্বের শিক্ষা। এতে থাকবে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাক-বুনিয়াদি, কিন্ডারগার্টেন, মন্তেসরি ইত্যাদি পাঠ্যস্তর।

(২) প্রাথমিক স্তর :
  • নিম্নপ্রাথমিক (I-IV) / (I-V) : চার বা পাঁচ বছরের শিক্ষা। কোথাও কোথাও জুনিয়র বেসিক নামেও পরিচিত।
  • উচ্চপ্রাথমিক (V-VII) / (VI-VIll) : তিন বছরের উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষা। কোথাও কোথাও জুনিয়র হাইস্কুল বা সিনিয়র বেসিক নামেও পরিচিত।

(৩) মাধ্যমিক স্তর :
  • নিম্ন মাধ্যমিক (VII-X) / (X-X) : দুই বা তিন বছরের শিক্ষা, যা উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত।
  • উচ্চমাধ্যমিক (XI-XIl) : দুই বছরের শিক্ষা। কোথাও এটা ইন্টারমিডিয়েট নামেও পরিচিত।

(৪) পেশামূলক ডিগ্রি : পেশামূলক যোগ্যতা অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট করে এমন ডিগ্রী সমূহ। যেমন— এমএ, এমএসসি, এমকম, এল এল বি, বিএড ইত্যাদি।

(৫) সাধারণ ডিগ্রি : পেশামূলক দিক ছাড়া যে-কোনাে ডিগ্রি।

(৬) স্নাতক স্তর : ডিগ্রি অর্জনের কোর্সসমূহ।

(৭) স্নাতকোত্তর স্তর : ডিগ্রি কোর্সের পরবর্তী কোর্স।

শিক্ষার স্তর অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা

১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই ভারত সরকার UGC-র চেয়ারম্যান ড. ডি এস। কোঠারির নেতৃত্বে যে কমিশন গঠিত হয়, সেখানে বিদ্যালয় শিক্ষার স্তরে শিক্ষার্থীদের যে বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়, তা নিম্নে উল্লেখ করা হল—

প্রাক্‌-প্রাথমিক স্তর :    নার্সারি ওয়ান – ৩+ বছর
                                        নার্সারি টু – ৪+ বছর
                                        নার্সারি থ্রি – ৫+ বছর

প্রাথমিক স্তর : (a) নিম্নপ্রাথমিক স্তর এবং (b) উচ্চ প্রাথমিক স্তর।

(a) নিম্নপ্রাথমিক স্তর :    প্রথম শ্রেণী – ৬+ বছর
                                        দ্বিতীয় শ্রেণি – ৭+ বছর 
                                        তৃতীয় শ্রেণি – ৮+ বছর 
                                        চতুর্থ শ্রেণি – ৯+ বছর

(b) উচ্চ প্রাথমিক স্তর :   পঞ্চম শ্রেণি – ১০+ বছর
                                         ষষ্ঠ শ্রেণি – ১১+ বছর
                                         সপ্তম শ্রেণি  - ১২+ বছর 
                                         অষ্টম শ্রেণি – ১৩+ বছর

মাধ্যমিক স্তর : (a) নিম্ন মাধ্যমিক স্তর এবং (b) উচ্চমাধ্যমিক স্তর।

(a ) নিম্ন মাধ্যমিক স্তর :   নবম শ্রেণি – ১৪+ বছর
                                          দশম শ্রেণী – ১৫+ বছর

(b) উচ্চমাধ্যমিক স্তর :    একাদশ শ্রেণি—১৬+ বছর 
                                         দ্বাদশ শ্রেণি ১৭+ বছর 

স্নাতক স্তর :     প্রথম বর্ষ – ১৮+ বছর। 
                           দ্বিতীয় বর্ষ – ১৯+ বছর 
                           তৃতীয় বর্ষ – ২০+ বছর

স্নাতকোত্তর স্তর :    প্রথম বর্ষ – ২১+ বছর
                                    দ্বিতীয় বর্ষ – ২২+ বছর

বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষার সমস্যার সমাধান আলােচনা করাে।


কমিশন কী উদ্দেশ্যে সাধারণ বিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করে? এই ধরনের বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? কেন কমিশন বিদ্যালয় গুচ্ছের স্থাপনের সুপারিশ করে?


উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে আলােচনা করাে। বর্তমান ভারতে প্রচলিত বিভিন্ন ধরনের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করো।