বয়স্কশিক্ষা (NAEP) বলতে কী বোঝো | বয়স্কশিক্ষা (NAEP)-এর বৈশিষ্ট্য, বাস্তবিকীকরণের মূল্যায়ন করো।

বয়স্কশিক্ষা (NAEP)-এর ধারণা

সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা রূপায়ণের জন্য ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত সারা ভারত ২৪ তম বয়স্কশিক্ষা সম্মেলনে বিধি মুক্ত বয়স্ক শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। যার ফলস্বরূপ ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের ২ অক্টোবর থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ১০ কোটি ব্যক্তিকে বয়স্ক শিক্ষা আওতাভুক্ত করা যায়। তার জন্য সারাদেশে জাতীয় বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচি বা National Adult Education Programme (NAEP)-এর কাজ শুরু হয়।

বয়স্কশিক্ষা (NAEP)-এর লক্ষ্য

দেশের অধিকাংশ জনগণ কার্যকরী নাগরিকের ভূমিকা পালন করবে। সামাজিক, আর্থিক প্রভৃতি ক্ষেত্রের উন্নয়নে দেশের একটা বৃহৎ অংশকে সক্রিয় করে তুলতে হবে।

(১) বিপুল সংখ্যক বয়স্ক ব্যক্তির স্বাক্ষর করে তোলা : বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ৫ বছরের মধ্যে দেশের ১০ কোটি বয়স্ক নিরক্ষর ব্যক্তিদের স্বাক্ষর করে তোলা।

(২) সামাজিক দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন : প্রতিটি রাষ্ট্রই চায় নাগরিক হিসেবে সে যেন তার দায়িত্ব ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালন করতে পারে। তাই প্রতিটি ব্যক্তিকে নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব ও কর্তব্যপরায়ণ করে তোলার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই বয়স্ক শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

(৩) কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠন : বয়স্ক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গঠন করা। কুসংস্কার সমাজের অগ্রগতিতে বড বাধা। তাই বয়স্ক শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষের মনের কুসংস্কার দূর করা প্রয়োজন।

(৪) ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার প্রকাশ : প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে যে অন্তর্নিহিত সুপ্ত সম্ভাবনা আছে, তা প্রকাশ করার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষার। ব্যক্তির সুপ্ত সম্ভাবনা প্রকাশ পেলে তা দেশের কল্যাণে নিয়োজিত করতে পারে। দেশ গঠনের দায়িত্ব যাদের হাতে, তাদের শিক্ষিত করা প্রয়োজন। তাই বয়স্ক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার প্রকাশ ঘটানো।

(৫) শিক্ষার অগ্রগতি ঘটানো : সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত মানুষদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।

(৬) সচেতনতা বৃদ্ধি : আত্মবিশ্বাস ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বয়স্ক শিক্ষার দরকার।

(৭) দক্ষতা বৃদ্ধি : প্রত্যেকটি মানুষের কর্মক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এই ধরণের শিক্ষার একান্ত দরকার।