মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান গুলি উল্লেখ করো।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান

বৃত্তিমূলক ও কারিগরি শিক্ষা ব্যাপক অর্থে আমাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার একটি অঙ্গ। সাধারণ ধর্মীয় শিক্ষার মতোই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে কয়েকটি স্তরের ব্যাখ্যা করা যায়, যথা—

মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান:

(১) জুনিয়র টেকনিক্যাল স্কুল: এই স্কুল গুলো সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষাদান করা হয়। অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তি হতে পারে। এখানে শিক্ষাকাল তিন বছর। ফিটার, টার্নার, ওয়েল্ডিং, টেলারিং ইত্যাদি বিষয়ে এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

(২) ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (ITI) : সাধারণ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা এই প্রতিষ্ঠানে দু-বছরের বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা লাভ করে। টার্নার, ফিটার, ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডার, কার্পেন্টার, সার্ভেয়ার ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে।

(৩) আংশিক বা পূর্ণ সমায়র শিক্ষা : যেসকল শিক্ষার্থী সপ্তম বা অষ্টম শ্রেণির পর পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে, তাদের জন্য আংশিক সময়ে বা পুরাে সময়ের জন্য বৃত্তি শিক্ষা দেওয়া হয় যাতে তারা উৎপাদন মূলক কাজ করতে পারে।

(৪) ডাকাযোগে শিক্ষা ও স্যান্ডউইচ কোর্স : বৃত্তিমুখী ও কারিগরি শিক্ষা দিতে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ডাকযোগে শিক্ষা দিতে হবে ও স্যান্ডউইচ কোর্সের ব্যবস্থা করতে হবে। স্যান্ডউইচ কোর্সটি ডিগ্রি কোর্সের মাঝে চলে, এটি যে বছর শিক্ষার্থীদের প্লেসমেন্টের সুযোগ আছে এই বছর। ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়গুলো এই কোর্সে পড়ানো হয়। এছাড়াও ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার, গণিত ইত্যাদি পড়ানো হয়। 

উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি ও কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান:

(১) পলিটেকনিক : সাধারণ ধর্মীয় শিক্ষা দশম শ্রেণি সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর, তবে বর্তমানে উচ্চতর মাধ্যমিক স্তর সফলভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী শিক্ষা লাভ করে থাকে। এই প্রতিষ্ঠানগুলির সময়কাল ৩ বছর। সিভিল, মেকানিকাল, ইলেকট্রিকাল, মাইনিং, মুদ্রণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এখানে।

(২) ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ : সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বিভিন্ন বিভাগে এখানে ডিগ্রি স্তরে পাঠদান করা হয়। ভরতির ন্যূনতম যােগ্যতা হল উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান বিভাগ) এবং প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

(৩) মেডিক্যাল কলেজ : এখানে চিকিৎসা বিদ্যা পড়ানো হয়। ভরতি হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা উচ্চমাধ্যমিক (বিজ্ঞান) এবং প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

(৪) নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : সরকারি ও বেসরকারি স্তরে এই বিষয়ের উপর সরকার স্বীকৃত কোর্স আছে। সাধারণত উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ, প্রবেশিকা পরীক্ষায় সফল শিক্ষার্থীদের এই কোর্সে ভর্তি করা হয়।