সমস্যা সমাধান মূলক শিখন এর অর্থ কী | সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন স্তরগুলি আলােচনা করাে।

সমস্যা সমাধান মূলক শিখন

বর্তমানে বিজ্ঞানের হাত ধরে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই পরিবেশে টিকে থাকতে, সুষ্ঠু জীবন রচনা করতে সমস্ত জটিল পরিস্থিতিকে কাটিয়ে সমাধানের পথ খুঁজতে হয়। সংক্ষেপে বলা যায় যে, জটিল পরিস্থিতির কারণে মানুষের চাহিদা বা লক্ষ্যপূরণের পথে যে বাধার সৃষ্টি হয়, তাকে বলে সমস্যামূলক পরিস্থিতি।
সমস্যা সমাধান মূলক শিখন
সমস্যা সমাধান মূলক শিখন

এই জটিল সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য শিক্ষার্থীদের আচরণের পরিবর্তনের মাধ্যমে যে শিখন কৌশল অবলম্বন করা হয়, তাকে বলে সমস্যাসমাধানমূলক শিখন।

মনােবিদ গেটস-এর মতে, সমস্যাসমাধানমূলক শিখন হল এমন যেখানে শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত প্রতিক্রিয়াটি আবিষ্কার করতে হয়। (“Problem Solving is a form of learning in which the appropriate response must be discovered")

আবার মনােবিদ গেইনি (Gayne)-এর মতে, লক্ষ্যপূরণের পথে যেসব বাধা দেখা যায়, সেগুলিকে অক্রিম করাকে বলে সমস্যাসমাধান। 

ব্যক্তিজীবনে চলার পথে নানারকম চাহিদার সৃষ্টি হয়। চাহিদা পরিতৃপ্তির জন্য সে অগ্রসর হয় এবং লক্ষ্যপূরণে বাধার সম্মুখীন হয়। সে বিভিন্ন রকমের প্রতিক্রিয়া করতে থাকে। তার মধ্যে সঠিক প্রতিক্রিয়াটি নির্বাচন করে ও তার বাধা অতিক্রম করে সমস্যাসমাধান করে ফেলে।

ব্যক্তির সমস্যামূলক পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করলে তিনটি বিষয় লক্ষ করা যায়। যথা—
  • চাহিদা, 
  • কাঙ্ক্ষিত বস্তু এবং 
  • চাহিদা ও কাঙ্ক্ষিত বস্তুর মধ্যে বাধা।
সমস্যা বিভিন্ন রকম হতে পারে, যেমন— 
  • শারীরিক, 
  • মানসিক, 
  • সামাজিক, 
  • প্রাক্ষোভিক, 
  • আর্থিক ইত্যাদি। 
বিভিন্ন প্রকার সমস্যাসমাধানের মাধ্যমে ব্যক্তি নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করে ও তার আচরণের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।

সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন স্তর

সমস্যাসমাধানমূলক শিখনে প্রাণী বাধা অতিক্রম করে লক্ষ্যবস্তু পাওয়া পর্যন্ত কতকগুলি স্তর অতিক্রম করে। এই স্তরগুলি হল—

(১) প্রস্তুতির স্তর : এই স্তরে প্রাণী বাধা ও লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে সচেতন হয়।

(২) প্রেষণার স্তর: সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্রে প্রাণীর আগ্রহ ও আকাঙ্ক্ষা তাকে নতুন আচরণে প্রেরণা দেয়।

(৩) তথ্যসংগ্রহের স্তর: এই স্তরে প্রাণী সমস্যা সম্পর্কে সবধরনের তথ্যসংগ্রহ করে।

(৪) প্রকল্পের স্তর: সমস্যাসমাধানের জন্য প্রাণী এই স্তরে একটা ছক তৈরি করে। এই ছককেই প্রকল্প বলে।

(৫) প্রকল্পের পরীক্ষা: সম্ভাব্য সমাধানের জন্য প্রাণী যে প্রকল্প গঠন করেছিল, সেগুলি এই পর্যায়ে এসে প্রয়ােগ করবে।

(৬) সমাধানের স্তর: এই স্তরে প্রাণী প্রকল্প অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া করতে থাকে এবং অবশেষে সমস্যাসমাধান হয়।

(৭) যাচাই করা: এই পর্যায়ে এসে দেখা হয় যেভাবে সমস্যাটি সমাধান করা হয়েছিল, আরও কী কী উপায়ে বা আরও সংক্ষেপে সেটিকে সমাধান করে সম্ভব কি না তা যাচাই করা হয়।

(৮) প্রয়ােগমূলক স্তর: সমস্যাসমাধানের পর সার্থকবিচারকরণের জন্য বা স্থায়ী আচরণ নির্দিষ্টকরণের জন্য প্রক্রিয়াটি বারবার প্রয়ােগ করবেন। এই স্তরটি সমস্যাসমাধানমূলক শিখনের শেষ স্তর। 

উপরােক্ত পর্যায়গুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্র। এই সমস্ত পর্যায়গুলির মাধ্যমে দৈহিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক, অর্থনৈতিক বিভিন্ন প্রকার বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বের উপযােগিতা আলোচনা করাে। শিশুর শিখনে অপারেন্ট অনুবর্তনের প্রভাব লেখাে। অপারেন্ট অনুবর্তনের শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখো। সক্রিয় অনুবর্তনের সীমাবদ্ধতা লেখাে।


প্রাচীন অনুবর্তনের সীমাবদ্ধতা


প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য করাে। প্যাভলভীয় অনুবর্তন ও অপারেন্ট অনুবর্তনের মধ্যে পার্থক্য লেখাে।  S টাইপ এবং R টাইপ অনুবর্তনের পার্থক্য লেখাে।