পরিকল্পিত শিখন বলতে কী বােঝাে | পরিকল্পিত শিখনে শিক্ষা প্রযুক্তির কৌশল গুলো কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?

পরিকল্পিত শিখন

শিখনের বিষয়বস্তুকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে ভাগ করে ফ্রেম গঠন করা হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করার ফলে ভুলত্রূটি কম হয়। যৌক্তিক ক্রমানুসারে এই ফ্রেমগুলিকে সাজানাে হয়। শিখনের সমগ্র বিষয়কে প্রশ্ন সহকারে পুস্তকাকারে অথবা টিচিং মেশিনের সাহায্যে উপস্থাপন করা হয়। শিক্ষার্থীরা সাজানাে ফ্রেমগুলির প্রথমটি পাঠ করে তার উত্তর দেয় যার প্রত্যুত্তরে তারা একটা ফিডব্যাক পায়। তখন তারা দ্বিতীয় ফ্রেমের জন্য অগ্রসর হয়। এইভাবে শিক্ষার্থীরা পরিকল্পনা মাফিক শিখন নিতে থাকে। সমগ্র বিষয়টিতে শিক্ষার্থীরা ভুলত্রুটি করে থাকলে, তা শিক্ষার্থীরা শিখে নিতে পারে। এই ধরনের শিখনকে বলে পরিকল্পিত শিখন।

Smith and Moore-এর মতে— Programmed instruction is the process of arranging the material to be learned into a series of sequential steps that is from known to unknown. অর্থাৎ তথ্যসমূহের অনুক্রমিক পর্যায়ের মাধ্যমে ধাপে ধাপে জানা থেকে অজানাকে শেখা।

প্রােগ্রাম শিখন হল গবেষণাভিত্তিক একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতি সম্পর্কে গবেষণা করেছেন অসংখ্য মনস্তত্ত্ব এবং শিক্ষাবিদ। এক্ষেত্রে পাঠ্যবই ও শিখন সহায়ক যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার হল শিখনসামগ্রী।

প্রোগ্রাম শিখন নিয়ে বিখ্যাত আমেরিকান মনােবিদ বি এফ স্কিনার ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে অপারেন্ট অনুবর্তন তত্ত্বটি দেন।

পরিকল্পিত শিখনে শিক্ষা প্রযুক্তির কৌশল

পরিকল্পিত শিখন পদ্ধতিতে শিক্ষা প্রযুক্তির কৌশল দুই ভাগে বিভক্ত— (১) গন শিক্ষাদানের কৌশল, (২) ব্যক্তিভিত্তিক শিখন কৌশল।

উদ্দেশ্য : পরিকল্পিত শিখনের প্রধান উদ্দেশ্য হল অল্পসংখ্যক শিক্ষকের সাহায্যে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীদের উন্নত পাঠদানের ব্যবস্থা করা।

(১) গন শিক্ষাদান কৌশল : যেখানে অল্পসংখ্যক শিক্ষকের সাহায্যে একসঙ্গে অধিক শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের পাঠদানের ব্যবস্থা করা যায়, সেই পদ্ধতি হল গণশিক্ষাদান কৌশল। যেমন— বেতার, দূরদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষাদান। গণশিক্ষাদানের কৌশল নীচে কয়েকটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যক্ত করা হল —
  • শ্রেণিকক্ষে ক্লোজড সার্কিড টিভি বা CCTV (Closed Circuit Television)-এর ব্যবহার, যা শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে বা শিক্ষক শিক্ষিকার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের শিখন কৌশল, সব কিছু বিষয়ে নজর রাখবে।
  • বাণিজ্যিক চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার।
  • টেলিভিশন, রেডিয়াের মাধ্যমে প্রচার।
  • কম্পিউটার কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা।

(২) ব্যক্তিভিত্তিক শিখন কৌশল : যেখানে শিক্ষার্থীর শিখন নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলে অর্থাৎ ব্যক্তির নিজস্বতার উপর নির্ভর করে, তাকে ব্যক্তিভিত্তিক শিখন কৌশল বলে। যেমন- টিচিং মেশিন ইত্যাদি। ব্যক্তিভিত্তিক শিখন কৌশল নীচে কয়েকটি উদাহরণের সাহায্যে ব্যক্ত করা হল —
  • স্লাইড শাে, ফিলম স্ট্রিপ, মাইক্রো ফিল্ম এগুলাে দেখে বা শুনে শিক্ষা গ্রহণ। 
  • নিজে নিজে পাঠ করে শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহণ। 
  • স্কিনারের টিচিং মেশিনের মাধ্যমে বাচনিক ও অবাচনিক বিষয় ব্যবহার। 
  • ভাষা পরীক্ষাগারের মাধ্যমে স্বশিখন।