মূক ও বধির শিশু কাদের বলে? সাধারণত কী কারণে এরা মূক ও বধির হয় | শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার কারণ

মূক ও বধির শিশু

জন্মের পর থেকে যেসব শিশুরা কথা বলতে পারে না তাদেরকে মূক ও যারা কানে শুনতে পায় না তাদেরকে বধির বলে। অর্থাৎ যেসব শিশুরা জন্মের পর থেকে কথা বলতে ও কানে শুনতে পারে না তাকে মূকবধির বলে। মনোবিদ স্ট্রেঞ্জের মতে “জন্ম থেকে যে শিশু কম শুনতে পায় বা শুনতে পায় না অথবা যে শিশু শৈশবেই ভাষা ও বাচনিক ভঙ্গি অর্জন করার পূর্বেই শ্রবণশক্তি হারিয়েছে তাকে মূকবধির বলে।

মূক ও বধিরতার কারণ

মূক ও বধিরতার কারণগুলি আলাদা আলাদা ভাবে আলোচনা করা হল-

(A) মূক বা বোবা হওয়ার কারণ:

(১) স্বরযন্ত্রের ত্রুটি : স্বরযন্ত্রের ত্রুটির কারণে শিক্ষার্থীদের কথার মধ্যে যেমন অস্পষ্টতা বা আড়ষ্টতা লক্ষ করা যায় তেমনি কখনো কখনো তারা সম্পূর্ণ বোবা হয়ে যায়।

(২) শ্ৰবণাঙ্গের ত্রুটি : শিশুরা যদি কানে শুনতে না পায় তাহলে তারা অন্যের কথা বুঝতে পারে না এবং তাদের ভাষার বিকাশ হয় না। অর্থাৎ তারা কথা বলতে পারে না।

(B) বধিরতার কারণ :

(১) আঘাতজনিত কারণ : জন্মের আগে শিশু মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় মায়ের পেটে আঘাত লেগে অথবা জন্মের সময় বা জন্মের পর পড়ে গিয়ে আঘাত লেগে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হলে শিশু বধির বা আংশিক বধির হয়ে যেতে পারে।

(২) বংশগত কারণ : পিতা-মাতা, উভয়েই বধির হলে তাদের সন্তানদের মধ্যে বধিরতা আসতে পারে। তবে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ করলে এর প্রবণতা কিছুটা কমে যায়।

(৩) শ্রবণজনিত ত্রুটি : অন্তঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ ও বহিঃকর্ণের কোনাে প্রকার ত্রুটির কারণে শিশুরা অনেকসময় শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারে।

(৪) সংক্রামক ব্যাধি : বিভিন্ন সংক্রামক ব্যাধির কারণে শিশুর মধ্যকর্ণের কলিয়া নষ্ট হয়ে হয়ে শিশু শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারে।

(৫) গর্ভবতী মায়ের সমস্যা : গর্ভাবস্থায় মায়ের ডায়াবেটিস, মাম্পস, ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রভৃতি রোগ হলে শিশুর শ্রবণ প্রতিবন্ধী হতে পারে। এ ছাড়া গর্ভবতী মহিলা যদি অতিরিক্ত মাদক সেবন করে কিংবা কুইনাইন, নিয়োমাইসিন ইত্যাদি জাতীয় ওষুধ খান তাহলে শ্রবণ প্রতিবন্ধী হতে পারে।

(৬) প্রসব সময়কালীন সমস্যা : প্রসবের সময় বাহ্যিক চাপ, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, গলায় নাড়ি পেঁচিয়ে থাকলে, শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে অক্সিজেনের অভাব ঘটলে শিশু বধির হয়।

(৭) শব্দ প্রভাব : নবজাতক শিশু যদি অতিরিক্ত শব্দ অনেকক্ষণ ধরে শােনে তাহলে বধির হতে পারে।

(৮) শিশুৱাগের প্রভাৰ : শিশুর অত্যধিক ঠান্ডা লাগা, অ্যালার্জি প্রভৃতি কারণে মধ্যকর্ণের ক্ষতি হতে পারে।

এ ছাড়া শব্দদূষণ, অপুষ্টি, অতিরিক্ত মাত্রায় ঔষধ সেবন স্থতির কারণে শিশুর শ্রবণ যন্ত্রের ত্রুটি দেখা দিতে পারে এবং শিশু ব্রণ প্রতিবন্ধী হয়ে যেতে পারে।